প্রশ্ন: কেউ যদি বলে যে, ‘ঈমান বাড়ে এবং কমে , আমাদের কাজও ঈমানের অংশ,কিন্তু একজন মানুষের কর্ম তাকে ঈমানের বাইরে নিয়ে যায় না’, তাহলে কি তাকে মুরজি’আ বলা যাবে?



উত্তর: আমরা জানি যে , মুরজি’আদের মাঝে বিভিন্ন ফিরকা (দল-উপদল) রয়েছে । তাদের মধ্যে একটি ফিরকা বলেঃ ঈমান হচ্ছে কিছু বাণী এবং বিশ্বাস, কিন্তু কাজ বা আমল এর অন্তর্ভুক্ত নয়।

আবার এমনও অনেক ফিরকা আছে যারা বলেনঃ ঈমান হচ্ছে কথা, বিশ্বাস এবং কাজের (আমলের) সমষ্টি ,কিন্তু তা সত্ত্বেও যারা জিনস-আল ’আমাল (কাজ বা আমলের ধরণ) বর্জন/পরিত্যাগ করে তারা কাফির নয়। মানে যে ব্যক্তি শারীরিক আমল করা ছেড়ে দেয়, সে কাফির নয়।

এ কথা জাহম ইবন সাফওয়ানের বরাত দিয়ে ইমাম ইবন হাযম (আল্লাহ উনার প্রতি দয়াশীল হোন) বর্ণনা করেন। এটি আরোপিত করা হয় গুলাত আল মুরজিআহ (মুরজিআহদের মধ্যে চরমপন্থি) -দের প্রতি ।

তাই যদি কেউ বলে যে, এই মতটি মুজতাহিদ আলেমদের কাছ থেকে এসেছে, তাহলে উনার কথা পরিতাজ্য। কিন্তু তিনি ইরজার লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না, যদিও তার কথা মুরজি’আদের কাছ থেকে এসে থাকে। কারণ যারা ইরজায় আপতিত হয় তারা সবাই মুরজি’আতে পরিণত হয় না।

কিন্তু এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে- কথা,কাজ এবং বিশ্বাসকে ঈমান বলে মুখে স্বীকৃতি দেওয়াই যথেষ্ট নয় বরং যারা "জিনস আল ’আমাল"-কে পরিত্যাগ করে তাদের তাকফির করতে হবে। এটাই আহলুস সুন্নাহর ইজমা।

তাদের ইজমা বর্ণীত হয়েছে আল আজুরীর ‘আশ শারীয়াহ’ থেকে এবং ইমাম ইবন বাত্তাহর ‘আল ইবাদাহ’ থেকে এবং শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়ার (আল্লাহ যেন তার প্রতি দয়াশীল হন) ‘কিতাব আল ইমান’ থেকে যা তাঁর ফতোয়ার সপ্তম অনুচ্ছেদের অন্তর্ভুক্ত।

আমরা জানি ইরজার অন্তর্ভুক্ত কিছু দল বলে যে, ঈমান হল কথা, বিশ্বাস এবং আমল। কিন্তু তারা আমলের পর্যায় থেকে কুফর সরিয়ে ফেলে এবং এটি বাস্তবে আল জাহম ইবন সাফওয়ান এবং চরমপন্থী ইরজাক্রান্তদের মাযহাব। এবং আল্লাহই সর্বাধিক অবগত।